স্বাক্ষর, জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বরসহ কিছু ব্যক্তিগত তথ্য জমা দিলেই সরকার থেকে বিনা সুদে ১ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দেয়া হবে– এমন প্রচারণা চালিয়ে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় হাজার হাজার মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি প্রতারক চক্র।
বেশ কিছু দিন ধরে ওই প্রতারক চক্রটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে তথ্য নিচ্ছেন। এমন অভিনব প্রতারণার বিষয়ে তথ্য এলে পরিচয় গোপন করে উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের একটি বাড়িতে গিয়ে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও ওই প্রতারকদেরকে স্বাক্ষর এবং ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া অন্তত ১০ জনের সাথে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।
তারা জানায়, শুধু বহুরিয়া ইউনিয়ন নয়, উপজেলার অনেক দূরের গ্রাম থেকেও মানুষ দলে দলে এসে বিনা সুদে ঋণ পাওয়ার আশায় নিজেদের স্বাক্ষর এবং ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে যাচ্ছে। সরকার থেকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কৃষি খামার করে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য এসব ঋণ দেয়া হচ্ছে বলে প্রতারকরা তাদেরকে জানিয়েছে। তবে এ বাবদ কারো থেকে টাকা নিয়েছে বা চেয়েছে–এমন তথ্য কেউ দিতে পারেননি।
সরেজমিনে দেখা যায়, ওই ওয়ার্ডের মনির হোসেন ও জাহাঙ্গীর নামের দুই লোক নিজ বাড়ির ওঠানে টেবিল-চেয়ার পেতে অফিস বানিয়ে বিনা সুদে ও নিঃশর্তে সরকার থেকে এক লাখ থেকে এক কোটি টাকা করে ঋণ পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হাজার হাজার মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছেন। তারা জানান, অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ নামের একটি সংগঠনের আঞ্চলিক সংগঠক হিসাবে তারা এ কাজ করছেন। গত দুই দিনে অন্তত এক হাজার মানুষের স্বাক্ষর, মোবাইল নম্বর, ও জন্মতারিখসহ ব্যক্তিগত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছেন বলেও তারা উল্লেখ করেন।
সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক এবং ইন্টারন্যাশনাল টেকনোলজি অব বাংলাদেশের প্রধান কর্মকর্তা আল হাসান মিলাদ বলেন, জাতীয় পরিচয় পত্রের তথ্য এবং স্বাক্ষর যাচাই-বাছাই ছাড়া কাউকে দেয়া উচিত না। এগুলো ব্যবহার করে সাইবার জগতের অপরাধীরা আপনাকে ফাঁসাতে পারে।
বহুরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি শুনেছি আমার ওয়ার্ডে একটি সংগঠন এরকম কাজ করছে। তবে কারা কোন বাড়িতে করছে তা জানা নেই।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।